Header Ads

আর্য ও হিন্দু

হিন্দুধর্ম

 ভূমিকা

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন র্মের নাম সনাতন ধর্ম।সনাতন শব্দের অর্থ- শাশ্বত অর্থাৎ যা আগে ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এই সনাতন ধর্মই বর্তমান হিন্দু ধর্ম। হিন্দু ধর্মের উৎপত্তির একটা ইতিহাস আছে। আমাদের হিন্দু জাতির উৎপত্তি হয়েছে আর্য জাতি থেকে। তাই হিন্দু ধর্ম হিন্দু জাতি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করতে হলে আগে আর্য জাতি সম্পর্কে জানতে হবে।

আর্য থেকে হিন্দুধর্মের উৎপত্তি


পণ্ডিতদের ধারণা পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন জাতি হল আর্য জাতি। পৌরাণিক উপাখ্যান ভাষা পর্যালোচনা করে মধ্য এশিয়াকেই আর্যদের উৎপত্তিস্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পণ্ডিতদের মতে মধ্য এশিয়া থেকে আর্যরা ভারতবর্ষ, ইউরোপ সহ অন্যান্য অঞ্চলে গমন করেছে। কিন্তু ইংলিশ পণ্ডিত ল্যাথাম, জার্মান পণ্ডিত বেনফিসহ অনেক পণ্ডিতবর্গের ধারণা আর্যদের আদি বাসস্থান ইউরোপে। হয়তো কোন বিশেষ কারণে আর্যরা ইউরোপ থেকে এশিয়ায় আসে। এরূপ সন্দেহেরও কিছু কারণ রয়েছে। ইউরোপীয় ভাষার অনেক শব্দ এসেছে আর্য ভাষা থেকে। তাছাড়া আর্যরা ছিল লম্বা গড়নের, ফর্সা বরণের এবং খাড়া নাক বিশিষ্ট ইউরোপীয়দের দৈহিক গঠনও রকম। তাই এই আর্যদের আদি নিবাস ইউরোপে থাকাটা অসম্ভব নয়। লিন্ডেন্স্মিথ প্রসঙ্গে বলেনভাষার ঐক্য ধরে যে সমস্ত জাতিকে আর্য নামে অভিহিত করা হচ্ছে, মস্তকের গঠন শারীরিক পরিণতি অনুসারে তাদের আদিম আদর্শ ইউরোপেই দেখা যায় ফলে আর্যদের উৎপত্তিস্থল যে কেবল মধ্যে এশিয়ায় তা জোর দিয়ে বলা যায় না। এমনও হতে পারে যে, আর্যরা একই সময়ে মধ্য এশিয়া হতে ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আর্য জাতির আদি নিবাস মধ্য এশিয়া বা ইউরোপ যেখানেই হোক না কেন তারা একই স্থানে সীমাবদ্ধ ছিল না। তারা ছড়িয়ে পড়েছিল পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। কোন বিশেষ কারণে তারা ভারতবর্ষে আসে। আর্যরা আগমনের পূর্বে ভারতে দ্রাবিড়, প্রাক-দ্রাবিড়, অস্ট্রিক প্রভৃতি জাতি ছিল।

ভারতবর্ষ ও হিন্দু


ভারত নামটি এসেছে রাজা ভরতের নামানুসারে। ঋকবেদে রাজা ভরত সুদাসের কাহিনী পাওয়া যায়। পূর্বে ভারতের নাম ছিল ব্রহ্মাবর্ত। আর্যরা আসার পর নাম হল আর্যাবর্ত। এছাড়া পুরানে যে জম্বুদ্বীপের উল্লেখ পাওয়া যায় তাই বর্তমানভারত যা হোক, আর্যরা ভারতে আসার পর সেখানে আধিপত্য বিস্তার শুরু করে। যারা তাদের নিয়মনীতি মানতো না, যজ্ঞে বিঘ্ন সৃষ্টি করত তাদেরকে তারা অনার্য বলে গালি দিত। ক্রমে-ক্রমে আর্যদের সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ে সিন্ধু তার অববাহিকা সংলগ্ন স্থানে। আর্যরা সিন্ধু তীরের আদিবাসীদের সংস্কৃতিও গ্রহণ করে। আর্য অনার্য সব সংস্কৃতি মিলেমিশে যা দাঁড়ায় তা এই বর্তমান হিন্দু সংস্কৃতি।হিন্দু শব্দটি এসেছে সিন্ধু শব্দ থেকে। খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে পারস্যরাজ সাইরাস দরায়ুস সিন্ধু আক্রমণ করেছিল। পারসিকেরা সিন্ধু উচ্চারণ না করতে পেরে বলত হিন্দু। হিন্দু নামটি কালক্রমে জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং সিন্ধুতীরের আদিবাসীরা নিজেদের হিন্দু হিসেবে পরিচয় দেয়া শুরু করে। উল্লেখ্য, ইরান দেশের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থআবেস্থায় সর্বপ্রথম হিন্দু শব্দটির সন্ধান পাওয়া যায়।

আর্যদের জীবন জীবিকা


আর্য জাতি সম্পর্কে আমাদের অনেক কিছু জানা দরকার- নইলে হিন্দু ধর্মের উৎপত্তি সম্পর্কে জানতে পারব না। আর্যদের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম বেদ। বেদ রচিত হয়েছিল আর্যরা ভারতে আসার পরে। বেদের রচনাকাল নিয়ে পন্ডিতদের মধ্যে মতভেদ আছে। জার্মান পন্ডিত ম্যাক্সমূলারের মতে বেদের আবির্ভাব কাল ১২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ কিন্তু পণ্ডিত ডিন্টারনিৎসের মতে ২৫০০-২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ। তবে ভারতীয় পন্ডিত বালগঙ্গাঁধর তিলক বলেন- খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে বেদের আবির্ভাব। বেদের রচনাকালে নিয়ে মতভেদ থাকলেও বেদ যে আর্যদের প্রধান আদি ধর্মগ্রন্থ নিয়ে কোন মতভেদ নেই।



আর্যদের জীবন জীবিকা সম্পর্কে বেদে যা পাওয়া যায়, এবার সে প্রসঙ্গে আসা যাক। আর্যরা ছিল কৃষি-নির্ভর জাতি। কৃষিকার্যের জন্য তাদেরকে প্রকৃতির উপর নির্ভর করতে হত। এজন্য বেদে বৃষ্টির দেবতা ইন্দ্র জলের দেবতা বরুণের কদর অনেক বেশি। ঋকবেদে ভূমি কর্ষণ (চাষ) করে ফসল উৎপাদনের উল্লেখ পাওয়া যায়। কর্ষণযোগ্য ভূমিকে বলা হয় সীতা। চাষী অর্থে কীনাশ, কৃষিবল ইত্যাদি বৈদিক শব্দের উল্লেখ আছে। ঋকবেদের বিভিন্ন স্থানে লাঙ্গঁল বলীবর্দ বা বলদের উল্লেখ পাওয়া যায়। বেদে লাঙ্গঁলকে বৃক বা সীর বলে। আর্যদের খাদ্যশস্যের মধ্যে ধান্য (ধান), গোধূম (গম), যব প্রভৃতি ছিল প্রধান। এসব খাদ্যশস্য ছাড়াও অজের মাংসের পুরাডাশ, বিভিন্ন ঘৃতজাত খাদ্য সহ নানা ধরনের খাদ্যের পরিচয় পাওয়া যায়। বেদে পানীয় হিসেবে সোমলতার রস, মধু, সুরা প্রভৃতির উল্লেখ আছে। আর্যরা কৃষিকাজের সাথে সাথে পশুপালনও করত। তাদের গৃহপালিত পশুদের মধ্যে গরু, মহিষ, অশ্ব, মেষ, অজ (ছাগল) ইত্যাদির স্পষ্ট উল্লেখ আছে। 

আর্যদের সম্প্রদায়

পণ্ডিতদের মতে রাশিয়ার ইউরাল পবর্তের দক্ষিনে আর্যদের মধ্যে দুটি সম্প্রদায় ছিল। তা হল নার্ডিক আলপিয়। আলপিয়রা কৃষি কাজ নাডির্করা পশুপালন করে জীবিকা নির্বাহ করত। ইহা ছাড়াও ভিষক (চিকিৎসক), বাসোবায় (বস্ত্রবয়নকারী), কাঠুরে, কার্মার (যারা মূর্তি তৈরী করে), মাল্যকার (যারা ফুল দিয়ে মালা তৈরী করে), বপ্তা (নাপিত) প্রভৃতি পেশাজীবীর উল্লেখ আছে বেদে। বৈদিক যুগে আর্যদের মাঝে ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রচলিত ছিল। তখনকার সমাজেও এখনকার মত ধনী, গরীব উভয় সম্প্রদায় ছিল। ধনের সমবন্টন সে যুগেও ছিল না। বৈদিক যুগে রাজা কর্তৃক রাজ্য শাসিত হত। সে কালেও রাজায় রাজায় যুদ্ধবিগ্রহ হত। রাজা ভরত  সুদাসের যুদ্ধের কথা ঋগে¦দের বেশ কিছু মন্ত্রে পাওয়া যায়।

আর্য সমাজে নারীর মর্যাদা


বৈদিক কালেও আর্য নারীদের আলাদা কদর ছিল। নারীরাও পুরুষের সঙ্গে যজ্ঞ করতে পারত। নারীদের বিশেষ বস্ত্র অলঙ্কারে বিভূষিতা করে বিয়ে দেয়া হত। আমাদের বর্তমান হিন্দু সমাজব্যবস্থায় পণপ্রথা নামে যে জঘন্য সংস্কার বিদ্যমান তা কিন্তু বৈদিক যুগে ছিল না। তখন বরকে কোন পণ দেয়া হত না বরং বরপক্ষ থেকেই কনেকে অর্থ, অলঙ্কার উপহার দিয়ে বিবাহকার্য সম্পন্ন করতে হত। বেদে স্বয়ম্বর সভারও উল্লেখ পাওয়া যায়। ¦য়ম্বর সভায় কন্যা তার পছন্দমত উপযুক্ত বর নির্বাচন করতে পারত। তবে নারীরা পিতার সম্পত্তির ভাগ পেত না। কিন্তু কারও পুত্র সন্তান না থাকলে কন্যার পুত্র (দৈাহিত্র) সম্পত্তি ভাগ পেত। 

আর্য পরবর্তি যুগের কুসংস্কার

কেউ কেউ বলেন- বেদে নরবলি সতীদাহ  প্রথার আভাস পাওয়া যায়। কিন্তু এটা কল্পনা প্রসূত। বেদে নরবলী সতীদাহের উল্লেখ নেই। বেদে বহুবিবাহের কথা আছে, বিধবা বিয়েরও পরোক্ষ উল্লেখ রয়েছে। বৈদিক যুগে একান্নবর্তী পরিবার ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। বাবা, জ্যাঠা, কাকা সবাই মিলেমিশে একত্রে বাস করত। বর্তমান হিন্দু সমাজ ব্যাবস্থায় প্রচলিত জাতিভেদ বা বর্ণভেদ বৈদিক যুগে ছিল না। /১১৩/ ঋকে আছেদেখ আমি স্ত্রোত্রকার, পুত্র চিকিৎসক কন্যা প্রস্তরের উপর যব ভঞ্জন-কারিনী। আমরা সকলে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করছি থেকে প্রতীয়মান হয় যে ব্রাহ্মণের  পুত্র ব্রাহ্মণ নাও হতে পারে। একই পরিবারে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র সব থাকতে পারে। কিন্তু বর্তমান হিন্দুসমাজে জন্মসূত্রে জাতক ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র বর্ণ লাভ করছে বর্ণভেদ বেদের সৃষ্টি নয়। বৈদিক যুগের পরে বর্ণভেদের সৃষ্টি। একদল উঁচু শ্রেণীর লোক নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বর্ণবাদের সূচনা করেছিল। মোটের উপর আমি বলতে চাই হিন্দু সমাজ ব্যবস্থায় প্রচলিত জাতিভেদ শাস্ত্রসম্মত নয়।

বৈদিক দেবতা

দেবতা ৩৩ জন, কিন্তু হিন্দুদের মাঝে তেত্রিশ কোটি দেবতাদের ধারণা প্রচলিত আছে। প্রসঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টপাধ্যায় বলেন  “ঋগে¦দে আছে যে, দেবতা তেত্রিশটি, কবি, ভক্ত বা ঠাকুরাণী দিদিদিগের গল্পেগল্পে তেত্রিশ কোটি হইয়াছে যাহোক, বেদের সে ৩৩ দেবতা তিন শ্রেণীতে বিভক্ত। যথা- দ্বাদশ আদিত্য, একাদশ রুদ্র অষ্ট বসু। ইহা নিয়ে হল ৩১ জন। এরপর দ্যু পৃথিবীকে নিয়ে ৩৩ জন মহাভারতে দ্বাদশ আদিত্য, একাদশ রুদ্র অষ্টবসুর যে উল্লেখ পাওয়া যায় তা হল -


দ্বাদশ আদিত্যঃ অংশ, ভগ, মিত্র, জলেশ্বর, বরুণ, ধাতা, অর্য্যমা, জয়ন্ত, ভাস্কর, ত্বষ্টা, পূষা, ইন্দ্র বিষ্ণু।
একাদশ রুদ্রঃ অজ, একপদ, অহিবুধ্র, পিনাকী, স্বৃত, পিতৃরূপ, ত্র্যম্বক, বৃষাকপি, শম্ভু, হবন ঈশ্বর।
অষ্টবসুঃ ধর, ধ্রুব, সোম, সবিতা, অনিল, অনল, প্রত্যূষ প্রভাস।

বর্তমানে পূজিত অনেক দেবতাদের নামই বেদে পাওয়া যায় না। বর্তমান হিন্দুসমাজে মহা আড়ম্বরে পূজিতা দেবী দুর্গা বেদে বাক দেবতা নামে স্তুত, দেবী কালী রাত্রী দেবতা নামে স্তুত। আর্যরা দেবতাদের উদ্দেশ্য বিভিন্ন ধরণের যজ্ঞ করত। যজ্ঞে ষোল জন ঋত্বিক বা যাজকের প্রয়োজন হত। ষোল জনের মধ্যে জন হোতা (ঋকমন্ত্র পাঠকারী), জন উদগাতা (সোম গানকারী ঋত্বিক), জন অধ¦র্য্যু (যজুর্বেদী ঋত্বিক) জন ব্রাহ্মণ (কার্য পরিদর্শক) যজ্ঞবেদীতে অগ্নি প্রজ্জ্বলন করে ঘৃত, সোমরস প্রভৃতি দ্বারা হোম করা হত। কোন কোন যজ্ঞে দেবতাদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পশুর মাংসও নিবেদন করা হত।

আর্যদের যাগ-যজ্ঞের মুখ্য কারণ


সে বৈদিক যাগ-যজ্ঞের প্রচলন এখন আর আগের মত নেই। সে যজ্ঞ এখন পূজায় রূপান্তরিত হয়েছে। আর্যরা যজ্ঞ করত কেন? ধনলাভের আশায়, ইহা যদি কারও উত্তর হয়- তবে আমি বলব উত্তরটি সম্পূর্ণ হল না। কারণ আর্যরা শুধু ধনলাভের আশায় যজ্ঞ করত না। তাদের যজ্ঞ করার আরেকটি মহৎ উদ্দেশ্য ছিল আর তা হল কৃতজ্ঞতা বোধ। এই কৃতজ্ঞতা দেবতাদের প্রতি। ইন্দ্র বৃষ্টিদান করে বরুণ জলদান করে ফসল ফলান। সুর্য আলো দিয়ে জীব জগতকে প্রতিপালিত করছেন, অগ্নি তাপশক্তির দ্বারা খাদ্য উৎপাদনে সহায়তা করছেন। এজন্য আর্যরা তাঁদের নিকট ঋণী। আর্যরা অকৃতজ্ঞ ছিল না, তাই উপকারীর উপকার স্বীকার করতে তারা কুন্ঠাবোধ করেনি। তারা দেবতাদের বিভিন্নভাবে স্তব করেছে, উৎসর্গ করেছে সবচেয়ে প্রিয় খাদ্যসামগ্রী আরও কত কি। দেবতাদের প্রতি আর্যদের শ্রদ্ধা বোধ নিছক কামনা চরিতার্থ করার জন্য নয় বরং তাদের উপকারের প্রতিদান দেয়ার জন্য। দেবতাদের স্তুতি করতে গিয়ে ঋষিকন্ঠে ধ্বনিত হয়েছে নানা মহৎ উদার বাক্য। যা আমরা ধর্ম বলে জানি।

আর্যদের উত্তরসুরী


যাহোক, এতক্ষন যে আর্যদের কথা বলা হল এরাই আমাদের (বর্তমান হিন্দুদের) পূর্ব পুরুষ। তারা যে পথ দেখিয়ে গেছেন আজও আমরা সে পথেই চলি। তারা স্রষ্টা সৃষ্টি সম্পর্কে যে ধারণা দিয়ে গেছে- সে ধারণা আজও আমরা লালন করি। তারা বলে গেছেন সত্যং বদঃ ধর্মং চর অর্থাৎ সত্য বল, ধর্মের অনুশীলন কর। তাদের সে হিতোপদেশকে আমরা ধর্ম বলে মানি। তারা বলে গেছেন ‘‘ঈশা ব্যাসমিদং সর্বং যৎকিঞ্চ জগত্যাং জগৎ তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জিথা মা গৃধঃ কস্যস্বিদ্ধনম।। অর্থাৎ এই গতিশীল বিশ্বে যা কিছু আছে তার সব কিছুতেই ঈশ্বর বাস করেন ত্যাগের সাথে ভোগ কর, কারও ধনে লোভ কর না। ইহাই পরম ধর্ম বলে আমরা স্বীকার করি। আজও বিবাহের সময় ঋকবেদের ১০ মণ্ডলের ৮৫ সূক্ত উচ্চারিত হয়, মৃত্যুর পর বৈদিক মতে আগুনে পুড়িয়ে প্রেতের সৎকার করা হয়। পূর্ব পুরুষরা যা বলে গেছেন আমাদের তা পালন করা কর্তব্য। কারণ আমরা তাদের বংশধর। আমরা যদি বেদ না মানি আর্যদের অনুসরণ না করি তবে আমরা স্বকীয়তা হারাব। আমরা নিজেদের একজন আদর্শ হিন্দু হিসেবে পরিচয় দিতে পারব না

উপসংহার


আর্যদের অনেক প্রথাই বর্তমান হিন্দু সমাজে প্রচলিত নেই। অনেক বৈদিক রীতিনীতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কিছু বিলুপ্তির পথে, আবার যোগ হয়েছে নতুন নতুন আচার অনুষ্ঠান। সময়ের হাত ধরে পরিবর্তিত হয় অনেক কিছুই। তবে যে পরিবর্তন মানুষের মঙ্গল বয়ে আনে, কেবল সে পরিবর্তনই আমাদের কাম্য। কারণ ধর্মের মূল লক্ষ্য জীবের মঙ্গল। পরিশেষে বলব যে, হিন্দু জাতির প্রতি আমার বিশেষ শ্রদ্ধা আছে। কারণ এরা অনেক ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করেও  নিজেদের ধর্মকে বিসর্জন দেয়নি, আজও সে সত্যকে ধরে আছে। জাতি সনাতন, শাশ্বত।  এদের বিনাশ নেই। কারণ এরা সে আত্মাকে বিশ্বাস করে যা অজর অমর।


সত্যম শিবম সুন্দরম

৬টি মন্তব্য:

  1. Get to know more about Bangla Books pdf :
    BanglaBook.org is a best online Bengali Book website for Bengali Books. You can find your favourite bengali story books,bengali ebook and bangla books pdf .

    Looking for the Bengali ebooks? BanglaBook.org is the official website to find your favourite bengali story books,bengali ebook and bangla books pdf at one place.

    উত্তরমুছুন
  2. Great! I’m a freelancer and want to improve my seo skills. You made the things light and easy to understand for the newbies like me and I really appreciate your knowledge and support through this Blog News . Thanks

    উত্তরমুছুন
  3. আর্য আগমনের পূর্বে কি সনাতন ধর্ম ছিল না,আর্য আগমনের পূর্বে এই উপমহাদেশে কোন ধর্ম ছিল কি?

    আর্য আগমনের পর যদি বেদ রচনা হয় তবে যে আর্যরা এই উপমহাদেশে আসতে পারেনাই তারা কোন ধর্ম অনুসরণ করত

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. আর্য আগমনের পূর্বে ভারতে দ্রাবিড় জাতি ছিল যারা মূর্তি পূজা করত।

      মুছুন
  4. বিশেষজ্ঞদের মতে হিন্দুধর্ম প্রাচীন ধর্ম বিধায় প্রথমে এর নামের প্রয়োজন পড়েনি। পরে একাধিক ধর্ম সৃষ্টি হবার পর ঐতিহাসিক কালে যারা প্রথমে ভারতবর্ষে আসেন, তারা সিন্ধু নদের তীরের এই ধর্মকে ‘সিন্ধু ধর্ম’ বলেন। কিন্তু ‘স’ উচ্চারণ করতে অসুবিধা হওয়ায়, সিন্ধুধর্ম হয়ে যায় ‘হিন্দুধর্ম’। হিন্দুরা পরে তাদের ধর্মকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার জন্য একটি নাম দেন, এই নামই ‘সনাতন’। হিন্দুদের ধর্ম তাই ‘হিন্দু ও সনাতন’ এই দুই নামে পরিচিতি পেয়ে থাকে।

    উত্তরমুছুন

Akash Bairagi. Blogger দ্বারা পরিচালিত.